বিনোদন

কিশোর পলাশের গানে ছদ্মবেশে সিরিয়াল কিলার: বুঝতেই পারেননি কিশোর পলাশ

সিরিয়াল কিলার হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম (বাউল সেলিম) অষ্টম শ্রেণি পাস করে কাজ করতেন মুদির দোকানে। ২০০১ সালে চাঞ্চল্যকর বিদ্যুৎ হত্যাকাণ্ডে ৪ জন আসামির মধ্যে তিনি অন্যতম। এ হত্যাকাণ্ডে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে বিষু হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ২১ বছর বয়সে অপরাধ জগতে পা রাখেন। এরপর থেকে এলাকায় বিভিন্ন মারামারিতে অংশ নিয়ে দুর্ধর্ষ হেলাল নামে পরিচিত লাভ করেন।

এসময় র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সেলিম ফকির নিজেকে আত্মগোপনে করতে বিভিন্ন সময় মাজার বা রেলস্টেশনে থাকতেন। সেলিম প্রায় চারটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ২০১০ সালের তার নামে একটি চুরির মামলা হলে জেলে পাঠানো হয়। এরপর ২০১১ সালে তার নামে নারী ও শিশু নির্যাতনে আইনে একটি মামলা হয়। পরবর্তীতে জেল থেকে ছাড়া পেলে বিষু হত্যায় যাবজ্জীবন সাজা হলে এলাকা থেকে কৌশলে পালিয়ে যান এবং ভবঘুরে জীবনযাপন শুরু করেন। 

তিনি আরও বলেন, আনুমানিক ৬ মাস আগে জনৈক ব্যক্তি ইউটিউবে প্রচারিত একটি গানের বাউল মডেল সম্পর্কে র‌্যাবের কাছে তথ্য দেয়, ওই মডেল সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বর্ণিত বিষয়ে র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে র‌্যাব নিশ্চিত হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ১৩ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

ফোক গানের অন্যতম জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কিশোর পলাশের শ্রোতাপ্রিয় গান ‘ভাঙা তরী ছেড়া পাল’র মডেল তিনি। তিনিই আবার সিরিয়াল কিলার! বলছি সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিমের কথা। ভয়ংকর এই খুনি সেলিম ফকিরের সঙ্গে গায়ক কিশোর পলাশের পরিচয় ও কীভাবে এই গানের সঙ্গে যুক্ত হলেন তা জানতে যোগাযোগ করা হয় কিশোর পলাশের সঙ্গে। 

‘ভাঙা তরী ছেড়া পাল’ খ্যাত গায়ক গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা গানটি শুট করার জন্য বিভিন্ন স্থান নির্বাচন করছিলাম। কারণ এটি আসলে গণ মানুষের গান এবং আমরা বিভিন্ন লোকেশনে ভিন্ন ভিন্ন মডেল নিয়েই কাজ করেছি। গানটিতে আসলে দর্শন তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের দুঃখ বেদনা তুলে ধরা হয়েছে।

কিশোর পলাশ আরও বলেন, তো এক পর্যায়ে আমরা গানের দৃশ্য ধারণের জন্য নারায়ণগঞ্জের রেল স্টেশনে যাই। সেখানে যাওয়ার পর অনেকটা সাধু বা বাউল টাইপের একজন মানুষকে পাই। তিনি সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিম। তখন তাকে আমরা চিনতাম না। গানের সিক্যুয়েন্সের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে সবাই মডেল হওয়ার জন্য অনুরোধ করি। তখন স্থানীয়রাও তাকে (সেলিম ফকির) অনুরোধ জানালে রাজি হয়ে যান। 

শুটিংয়ের সময় কি কখনো মনে হয়েছিল তিনি এতোটা ভয়ংকর মানুষ? জবাবে এই শিল্পী বলেন, তাকে দেখে বোঝাই যায়নি যে সে সিরিয়াল কিলার। কারণ নিরীহ মানুষের মতো জীবন যাপন করে। শুটিংয়ে সে আমাকে ক্রস করবে এবং আমিও তাকে ক্রস করব। শুটিং শেষে আমরা তাকে হাজার খানেক টাকা দিয়েছিলাম। 

পলাশ বলেন, আমরা যদি জানতাম সে সিরিয়াল কিলার তাহলে আমরা তার সঙ্গে কাজই করতাম না। আগে জানলে তো ভয়ে থাকতাম। তবে এখন চিন্তা হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের আবার ডাকে কিনা!

উল্লেখ্য: “ভাঙ্গা তরী ছেড়া পাল” গানটি রানা শেখের কথা ও সুরে এফএ ‍সুমনের সঙ্গীতায়োজনে কন্ঠ দিয়েছেন ফোক গানের অন্যতম জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী কিশোর পলাশ। 


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker