শিক্ষা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা; দুপুরে বসছে দুই মন্ত্রণালয়

সারা দেশে করোনা পরিস্থিতি ক্রমে উন্নতির দিকে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা করছে সরকার। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে যৌথ বৈঠকে বসবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জোর প্রস্তুতি চলছে। বৃহস্পতিবার শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানদের নিয়ে এ সংক্রান্ত একটি পর্যালোচনা বৈঠক হবে। এখন করোনা সংক্রমণ নিচের দিকে। সব বিষয় আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। করোনা মোকাবিলা সরকারের গঠিত পরামর্শক কমিটি ও দেশের প্রবীণ শিক্ষাবিদদের মতামত নেওয়া হচ্ছে।

ভার্চুয়াল এ বৈঠকে চলমান করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রমের পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন নীতিনির্ধারকরা। বৈঠকে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা- এ দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং তিন সচিব অংশ নেবেন।এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটির সদস্যদের বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত আগামী শনি অথবা রোববার সংবাদ সম্মেলনে জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সংক্রমণের হার ৭-৮ শতাংশ থাকলেও খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকে যে কোনো সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে ক্লাস চলবে, সে ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শুরুতে এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা সপ্তাহের ছয় দিন ক্লাস করবে। অন্যান্য শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন হতে পারে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের বৈঠকে খোলার সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এ ব্যাপারে রূপরেখা দেবে ইউজিসি।

এর আগে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক উপ-কমিটির আয়োজনে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। খুব শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শুধু সংক্রমণের হার আরেকটু নিচে নামার অপেক্ষায়।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বৈশ্বিক সংকটের শুরু থেকে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত না করে, স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে যেন কাজ করি। আমরা এখন পর্যন্ত সেটাই করছি। তারা যেন পড়াশোনায় পিছিয়ে না পড়ে, এজন্য নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছি।

দীপু মনি বলেন, সংক্রমণের হার ক্রমেই নিচে নেমে আসছে- এটা আমাদের জন্য সুখবর। এই নিম্নগতি থাকলে খুব শিগগিরই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব।

ধাপে ধাপে খোলার কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পৃথিবীর যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি। কারণ এ অসুখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সবাই শুরু থেকেই সপ্তাহে ৬ দিন হয়তো ক্লাস করার সুযোগ পাবে না। একটু সময় নিয়ে হবে সেটা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি আছে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত গত ১৭ মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়। এরমধ্যে কয়েকবার চেষ্টা করেও এ মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর খোলা সম্ভব হয়নি। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দ্রুত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker