ঈদ এলেই নাড়ির টানে শহর ছেড়ে গ্রামে যাওয়ার প্রতিযোগীতা তৈরি হয়। পরিবার ছেড়ে দূরে থাকা মানুষ গুলো তাই যেভাবে হোক ছুটে চলে নিজ জন্মভূমির দিকে। লকডাউন, বাঁধা বিপত্তি সব কিছুই তাদের মনের টানের কাছে পরাজিত। পরিবার ছাড়া যেন একটা ঈদ নিরর্থক।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। বহু মানুষ যেমন জীবিকার টানে এখানে আসে তেমনি কিছু স্বপ্নবাজ যুবক আসে পড়াশোনা করে নিজের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে। ‘সাত কলেজ’ রাজধানী ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজ প্রায় ২ লক্ষ শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছে এখানে। তার মধ্যে অন্যতম সরকারি তিতুমীর কলেজ প্রায় ৬৮ হাজার শিক্ষার্থীর এই কলেজটিকে করোনা আজ স্থবির করে দিয়েছে, স্থবির করেছে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে নানা সমস্যায়, অবহেলায় জর্জরিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন, সেশনজট, ফলাফল বিপর্যয় এসব যেন পিছু লেগেই আছে।
তার মধ্যে করোনা মহামারি তে প্রায় দেড় বছরের মত বন্ধ রয়েছে স্বশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম। লকডাউনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন সময় ফরম ফিলাপ, পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায়, একাডেমি সংশ্লিষ্ট কাজে শিক্ষার্থীদের আসতে হয়েছে ঢাকায়। গত ১ জুলাই থেকে সরকারের দেয়া টানা কঠোর লকডাউনে অনেক শিক্ষার্থী আটকে পড়েছে ঢাকায় ফলে পরিবার এর সাথে ঈদ উদযাপন করা হবে না অনেকের। লকডাউন শিথিল হলেও দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় এবং ৬০℅ বর্ধিত ভাড়ায় বাড়ি ফেরা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাবি উঠে কলেজের যেহেতু নিজস্ব পরিবহন আছে সেই পরিবহনে জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেয়া হোক তাদের। শিক্ষার্থীরা জানায় জবি, রাবি, ইবি সহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব পরিবহনে করে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে। তারা পারলে তিতুমীর কলেজ প্রশাসন কি পারেনা এমন একটি উদ্যোগ নিতে।
এ বিষয় জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো: আশরাফ হোসেন বলেন, “স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান না হওয়ায় সরকারি কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে কলেজ বাস দেয়ার সুযোগ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বাস দিতে পারেনি। সেখানে আমাদেরতো কলেজ। আমাদেরকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চলতে হয়। তবে হ্যাঁ, কিছু কিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস দিতে পেরেছে। এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।”
তিনি আরোও বলেন, “যারা শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস ব্যবহার করতে পেরেছে তাদের স্বায়ত্ত্বশাসনের একটা অধিকার রয়েছে। এটা আসলে বোঝার বিষয়। সে জায়গায় আমরা কলেজ হিসাবে চাইলেও যা ইচ্ছা সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা।”
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.