বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। তিনি ঢাবি মেডিক্যাল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। এর মাধ্যমে ঢাবি ক্যাম্পাসসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হয়ে ওঠেন পরিচিতি মুখ।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই রনি চা বিক্রি করে আবারও আলোচনায় আসেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক ফেসবুক পোস্টে চা বিক্রি সম্পর্কে তিনি জানান, এটা কোনো সাময়িক সময়ের ক্যাম্পেইন বা নিছক মজার উদ্দেশে নয়। আত্মশুদ্ধির আন্দোলন, ক্ষুধামান্দ্য দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সৎ উপায়ে উপার্জনের লক্ষ্যে ব্যবসাটা শুরু করেছি।
আজ শুক্রবার নতুন একটি পোস্ট দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে এলেন। এই পোস্টে রনি বলেন, ‘চা বিক্রেতা হিসেবে গত ফেব্রুয়ারি মাসের বেচা-কেনার লভ্যাংশ ও ক্রেতাদের টিপসের টাকায় এবারের সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট আরিফ ভাইয়ের নতুন ব্যবসা। তিনি বিএসএস পাস কোর্স ডিগ্রি অর্জন করে অনেকদিন থেকে বেকার অবস্থায় ঘুরছিলেন। গত মাসে ঢাকায় এসে কয়েকদিন আমার সাথে চা বিক্রি করায় সহযোগিতা করেছেন এবং নিজেও শিখেছেন। তিনি চায়ের ব্যবসায় বেশ উৎসাহী। তাই আজকে থেকে তিনি মুক্ত স্বাধীন ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন।’
‘আরিফ ভাইকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মোড়ের আশপাশেই পাওয়া যাবে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই দিকটায় কখনো গেলে অবশ্যই তার কাছ থেকে চা খেয়ে অনুপ্রেরণা যোগাবেন। দেখা হলেই তাকে বলবেন, জনগণের টাকা মেরে খাওয়ার চাইতে চা বিক্রি করা সম্মানের, রিকশা চালানো সম্মানের, জুতা সেলাই করাও সম্মানের। এইটাই হোক আমাদের তারুণ্যের অনুভূতি।’
শিক্ষিত বেকার তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন অলসতা সবচেয়ে বড় অভিশাপ। পরিবারের বোঝা না হয়ে দেশের বোঝা না হয়ে স্বাবলম্বী হউন। কোনো উপায় খুঁজে না পেলে চলে আসুন আমার চায়ের দোকানে। আগামী সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্টটা আপনার জন্যেও হতে পারে।’
রনি বলেন, ‘সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট কোনো দান খয়রাত নয়। কাউকে ছোট মনে করা নয়। এটা আমার ব্যবসার লভ্যাংশ ও আমার ক্রেতাদের টিপ্সের টাকা বা তাদের ভালোবাসা। আর ব্যবসায়ী হিসেবে নিজের কমিউনিটির পিছিয়ে পড়া বন্ধুকে সামনে এগিয়ে এনে সমান উচ্চতায় দাড় করানোর প্রচেষ্টা মাত্র।’
মহিউদ্দিন রনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্ট্যাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরের জুলাই মাসে টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর ঈদুল আজহার আগে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন তিনি। ১৯ দিন অবস্থান করার পর রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছয় দফা দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করে ঘরে ফিরে যান রনি।
এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোর্তজা মেডিক্যাল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসেন এই শিক্ষার্থী।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.