আন্তর্জাতিক

জীবিকার তাগিদে তারা ঘর ছেড়েছিলেন প্রাণ গেল পথে

পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের রাসেল মিয়ার। ঢাকায় বিমানবন্দর পর্যন্ত যাওয়ার জন্য রাসেলের সঙ্গী হয়েছিলেন মা সহ চার স্বজন। তারা উঠেছিলেন আন্ত নগর এগারসিন্দুর ট্রেনে। ভৈরবে দুর্ঘটনায় বাকি তিনজন অক্ষত থাকলেও রাসেল মারা গেছেন।

রাসেল মিঠামইনের ঘাগড়া এলাকার হাবিব মিয়ার ছেলে। আগামীকাল বুধবার তাঁর সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল। মা রোকেয়া বেগম, ছোট ভাই শামীম মিয়া, বোন জামাই শাহ আলম, ভাগনি ইভাকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল সোমবার তিনি ঢাকায় যাচ্ছিলেন। এগারসিন্দুর ট্রেন ভৈরর স্টেশন পার হওয়ার পরপরই মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাসেলসহ ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।সোমবার রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাসেলের লাশ নিয়ে আসার পর মা রোকেয়া বেগম বিলাপ করছিলেন। অন্য স্বজনদেরও আক্ষেপের শেষ নেই। পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হওয়া রাসেলের এমন মৃত্যু কেউ মানতে পারছেন না।
বাজিতপুর উপজেলার দইগাঁও গ্রামে কৃষিকাজের পাশাপাশি দিনমজুরের কাজ করতেন আসির উদ্দিন। ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনিও মারা গেছেন।পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়ে স্বজনদের বিলাপ থামছিল না। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এসে আসিরের লাশ শনাক্ত করেন। এ সময় তাদের আর্তচিৎকারে হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আসির উদ্দিনের পরিবারে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছে। নরসিংদীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। পারিবারিক কাজে গ্রামের বাড়িতে এসে সোমবার নরসিংদী ফিরে যাচ্ছিলেন।

আসিরের বোন সাবিনা বেগম বলেন, মানিকখালি স্টেশন থেকে তাঁর ভাই ট্রেনে ওঠেন। কয়েকঘণ্টা পর ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছেন। 

ঢাকার একটি পোশাক কারখানারকর্মী হীরা আক্তার তিনদিন আগে কিশোরগঞ্জে গ্রামের বাড়ি এসেছিলেন। দুর্ঘটনায় তিনিও মারা গেছেন। হাসপাতালে তাঁর লাশ শনাক্ত করেন চাচা বাতেন মিয়া। বলেন, ‘পরিবারের আয় বাড়াতে ঢাকাতে কাজ করতো হীরা। এখন সেই আশা শেষ হয়ে গেলো।’


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker