নেত্রকোণা

ভেঙে পড়ল সাড়ে ১২ কোটি টাকায় নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের বিম

নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের একটি গ্রেট বিম ও একটি পিলার ভেঙে গেছে। গত রোববার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে এটি ভেঙে পড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ত্রুটিযুক্ত নির্মাণকাজের জন্যই এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

তবে স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগের ভাষ্য, এটি ভেঙে পড়েনি। নির্মাণকাজে ত্রুটির কারণে ইচ্ছাকৃতভাবেই ভেঙে ফেলা হয়েছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বারহাট্টা উপজেলা সদরের পরিত্যক্ত আদালত ভবন এলাকায় মডেল মসজিদটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৪২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। যৌথভাবে নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে স্টার লাইট সার্ভিসেস লিমিটেড ও মেসার্স নায়মা এন্টারপ্রাইজ নামের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে নির্মাণাধীন মসজিদের তিন তলার একটি বিম ও একটি পিলার ভেঙে যায়। শব্দ পেয়ে অনেকেই সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক শহীদুর রহমান বলেন, আমি গিয়ে দেখি মসজিদের ওপরে ওঠার রাস্তাটি বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। পরে শ্রমিকদের দিয়ে সেগুলো সরিয়ে ওপরে উঠে ভেঙে যাওয়া অংশটি দেখতে পাই।

নির্মাণকাজে অনিয়ম এবং ত্রুটির কারণেই এটি ভেঙেছে উল্লেখ করে শহীদুর বলেন, মসজিদ নির্মাণে অনেক অনিয়ম হচ্ছে। রড কম দেওয়া হচ্ছে। ঢালাইয়ের পর পর্যাপ্ত পানি দেওয়া হচ্ছে না। সিমেন্টের তুলনায় বালু ও সুরকির পরিমাণ বেশি।

বারহাট্টা উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো: নূর উদ্দিন বলেন, রাতের আঁধারেই ভেঙে যাওয়া বিমটি গুঁড়িয়ে ফেলেছে ঠিকাদারের লোকেরা। মসজিদটির নির্মাণকাজে ব্যাপক ত্রুটি দেখা যাচ্ছে।

বারহাট্টার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলাম সোমবার সকালে মসজিদের ভেঙে যাওয়া অংশটি পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসক কাজি মো: আবদুর রহমান ইউএনওকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন।

ইউএনও এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের চিঠিটি পেলেই আমরা তদন্ত শুরু করব।

এদিকে নির্মাণাধীন মসজিদের বিম ও পিলারটি আকস্মিকভাবে ভেঙে পড়েনি বলে দাবি করেছেন নেত্রকোণার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাসিনুর রহমান।

তিনি বলেন, গত রোববার সকালে নির্মাণকাজ পরিদর্শনে গিয়ে বিমটিতে কিছু ত্রুটি দেখতে পাই। ঠিকমতো স্থাপত্য নকশা মেনে এটি নির্মাণ করা হচ্ছিল না। তাই আমরা এটি ভেঙে আবারও নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রকল্পের প্ল্যান- এস্টিমেট অনুয়ায়ী কাজ করছি। নির্মাণকাজে কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker