সরিষাবাড়ী

সরিষাবাড়ীতে ভাতার কার্ড করে দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বিভিন্ন ধরনের সরকারি ভাতার কার্ড করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে লাল মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শেফালি বেগম নামে এক নারী এর প্রতিকার চেয়ে গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরিষাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মহাদান ইউনিয়নের সেংগুয়া গ্রামের ভুলো শেখের ছেলে লাল মাহমুদ। সে গত ২ বছর পূর্ব থেকে মহাদান ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও শিশু কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ঘুড়ে বেড়ান। সেই সুত্রে মহাদান ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ও বাশঁবাড়ী গ্রামের ২০ জন নারী-পুরুষের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে ১০ হাজার/৮হাজার/৬হাজার/৫হাজার করে প্রায় ১ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। সবার মনে বিশ্বাস জোগাতে নতুন সিম দিয়ে করে দেন নগদ একাউন্ট। এ সব করে টাকা নেওয়ার ২ বছর পার হলেও কোন ব্যক্তিকে কার্ড করে দেয়নি লাল মাহমুদ। অসহায় মানুষদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে টাকা গুলো নিজের পকেটে তুলেন প্রতারক লাল মাহমুদ। দীর্ঘ দিন তার পেছনে ঘুরে কোন কার্ড ও টাকা ফেরত না পেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

বাঁশবাড়ী গ্রামের ভুক্তভোগী ইয়াকুব আলী বলেন, ‘তাকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিবে এমন আশ্বাস দেন লাল মাহমুদ। কিন্তু ১০ হাজার টাকা নিয়ে সে আর কার্ড করে দেয় না। টাকা চাইলে বলে কিসের টাকা।

অভিযোগকারী ভুক্তভোগী শেফালি বেগম বলেন, ‘বয়স্ক কার্ডের জন্য টাকা নেয় ৮ হাজার। এখন কার্ডও করে দেয় না, টাকাও দেয় না। টাকা চাইলে অকথ্যভাষায় গালাগালি করে লাল মাহমুদ।

রঘুনাথপুর গ্রামের ভুক্তভোগী জমিলা বেওয়া, জুলেখা বেগম, রোজিনা বেগম, মোস্তাফা মিয়া, সুন্দরী বেগম, জামাল মিয়া, শেফালি বেগম বলেন, তারা কেউ বয়স্ক, কেউ শিশু কার্ড, কেউ বিধবা কার্ডের জন্য টাকা দিয়েছেন। লাল মাহমুদ মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে টাকা গুলো নিয়েছে। প্রতিশ্রুতি দেয়, কার্ড ১০০% করে দিবে সে। এছাড়া তিনি মোবাইল সিমকার্ড নিয়ে এসে নগদ একাউন্ট ও করে দিয়েছে। কিছুদিন পরে তারা জানতে পারেন সে প্রতারক। টাকা গুলো সবার কাছ থেকে মিথ্যা বলে নিয়েছে। পরে কার্ডের জন্য তাঁর কাছে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও কার্ড না পেয়ে টাকা ফেরত চাইলে তিনি টালবাহানা শুরু করেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত লাল মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাকা নিয়েছি কিন্তু আমি একাই নেইনি। কিছু টাকা তাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। আর কিছু টাকা পাবে দিয়ে দিবো।

এ-ব্যাপারের মহাদান ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘লাল মাহমুদকে তিনি সঠিক ভাবে চিনেন না। যদি সে ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তার শাস্তি হওয়া উচিৎ। মহাদান ইউনিয়ন থেকে টাকার বিনিময়ে কোন ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয় না।

এ-বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মোহাম্মদ মুর্শিদ আলম বলেন, অভিযোগ আসার পর তদন্তের জন্য লাল মাহমুদের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker