জামালপুর

জামালপুরে নবম শ্রেণীর ছাত্রকে নির্যাতন, চাঁদাবাজির অভিযোগ

সহপাঠীর সঙ্গে মজা করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয় শিক্ষকের মারধরের শিকার হয়ে নিরাপত্তা কর্মীর কক্ষে অবরুদ্ধ ছিলেন দুই ঘণ্টা। তাতেও রেহাই মেলেনি তার। এরপর চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের এমন কঠোর সিদ্ধান্তে সদ্য বাবা হারানো ছেলেটি জীবনে শোকের মধ্যে নতুন করে নেমে এসেছে অন্ধকার। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

জামালপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো: ইসমাইল হোসেন। গত ১৫ মার্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে সহপাঠী বন্ধুর সঙ্গে আচার খাওয়া নিয়ে মজার ছলে হাতাহাতির দৃশ্য নজরে আসে বিদ্যালয়ের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর মেশিনিস্ট শিক্ষক এফ এম রুহুল ফুরকানের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইসমাইল হোসেনকে চর-থাপ্পড় দিয়ে এক নিরাপত্তা কর্মীর রুমে নিয়ে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এরপর সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেন।

আরো পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান: বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা

দেড় মাস আগে বাবার মৃত্যুর শোকে শোকাহত পরিবারের কাছে ভয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান ইসমাইল হোসেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়া চিঠি পুরো পরিবারসহ এলাকাবাসীকে হতভম্ব করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের চিঠিতে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ইসমাইল হোসেনের মা বলেন, `আমার ছেলে অনেক ভালো। এলাকার একজন মানুষও আমার ছেলেকে খারাপ বলতে পারবে না। দুই মাস আগে তার বাবা মারা গেছে। আমার বড় ছেলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমি ক্যানসারে ভুগছি। বড় ছেলে লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার রেখে যাওয়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার ও দুই ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছে। স্কুলে তার বন্ধুর সঙ্গে আচার খাওয়া নিয়ে হাতাহাতির ঘটনায় তারা আমার ছেলেকে মারধর করে দুই ঘণ্টা একটি রুমে আটকে রাখে। এই ঘটনা বাড়িতে এসে আমাদের বলেনি। স্কুলের চিঠি পেয়ে আমরা ঘটনা জেনেছি।’

আরো পড়ুন: এবার বঙ্গবাজারে বরিশাল প্লাজায় আগুন

বিদ্যালয়ের এমন কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, এই পরিবারটি সহজ সরল। ইসমাইল হোসেন ওরফে অমিত ভালো ছেলে।

অভিযুক্ত শিক্ষক এফ এম রুহুল ফুরকান সেলিম বলেন, সহপাঠীর কাছে চাঁদাবাজির বিষয়টি তিনি প্রমাণ পায়নি জানিয়ে তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

জামালপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ড: প্রকৌশলী মো: আবুল হাশেম বলেন, ছাত্রের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের কথা মতো তিনি পত্র দিয়েছেন। চাঁদাবাজির অভিযোগের বিয়য়টি এড়িয়ে গিয়ে এ ব্যাপারে কোন প্রতিবেদন না করার অনুরোধ করেন।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker