সাতক্ষীরা

স্ত্রীর ডিভোর্স নোটিশ পেয়ে শ্বশুরকে খুন করলো জামাই

সাতক্ষীরার দেবহাটায় স্ত্রীর ডিভোর্স নোটিশ পেয়ে শ্বশুরকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে এক জামাতার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার মাটিকুমড়া গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম আজগার আলী সরদার (৫৫)। তিনি দেবহাটা উপজেলার মাটি কুমড়া গ্রামের মৃত সুরত আলী সরদারর ছেলে এবং পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।

মাটিকুমড়া গ্রামের আক্তার হাসেন সরদার জানান, তার বড় ভাই আজগার আলীর ছোট মেয়ে শিল্পী খাতুনের সঙ্গে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বরয়া গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে খালাতো ভাই সালাহউদ্দিনের দু’ বছর আগে বিয়ে হয়। সালাহউদ্দিন বেকার হওয়ায় বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে শিল্পীকে প্রায়শই নির্যাতন করতেন।

এ নিয়ে কয়েকবার শালিস হয়েছে। এরপরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় ১০ দিন আগে শিল্পীকে বাড়িতে নিয়ে এসে সালাহউদ্দিনের ঠিকানায় তালাকনামা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এত ক্ষুব্ধ হয়ে সালাহউদ্দিন গত রোববার ও সোমবার গভীর রাতে তাদের (আক্তার) বাড়ির পাশে ঘোরাঘুরি করতেন। কখনো তাকে গাছের ওপর উঠে বসে থাকতেও দেখা গেছে।

আক্তার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টায় ভাত খেয়ে নিজের ঘরের বারান্দায় মশারি টানিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ভাই আজগার। দিবাগত রাত একটার দিক আগে থেকে ওৎ পতে থাকা সালাহউদ্দিন ঘুমন্ত মশারির ওপর দিয়ে আজগার আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। ভাইয়ের চিৎকার শুনে তিনিসহ স্থানীয়রা ছুটে এসে আজগার আলীকে রাত সোয়া দুইটার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

আজগর আলীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সামেক হাসপাতালে ভর্তি না নিলে বুধবার ভোর সোয়া চারটার দিকে তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা চলাকালীন ভোর ৫টার দিকে আজগার আলী মারা যান।

খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষ লাশ গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত আজগার আলীর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন জানান, শ্বশুরকে হত্যার পর সালাহউদ্দিন ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেজন্য খুনের আগেই ভারতীয় ভিসা প্রস্তুত করে রাখে সে। যে কোন সময় সালাহউদ্দিন ভারতে পালাতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা করছেন।

দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker