টানা ২৮ দিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে খুলনার রহিমা বেগমকে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুর থেকে তাকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নিখোঁজের ঘটনায় রহিমার বেগমের সন্তানরা মামলা করলে আটকও হতে হয়েছে ছয় জনকে। তবে আটকৃতদের পরিবারের সদস্যদের দাবি, জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে আত্মগোপন করেছিলেন রহিমা বেগম। বিষয়টি জানতেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ পরিবারের সদস্যরা।’
রহিমাকে উদ্ধারের পর এ মামলায় আটক রফিকুল আলম পলাশ ও নুরুল আলম জুয়েলের বাবা আনসার উদ্দিন আহমেদ বলেন, তার ছোট ছেলে রফিকুল আলম পলাশ চাকরি করে এবং বড় ছেলে নুরুল আলম জুয়েল মুদি দোকানি। তার দুই ছেলেকে রহিমাকে কথিত অপহরণের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারা হয়রানির শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে জমির সীমানা নিয়ে মতবিরোধ থাকায় মামলা দিয়ে হয়রানি ও সম্মানহানি করা হয়েছে।
এ মামলায় আটক মহিউদ্দিন ও গোলাম কিবরিয়ার বড় ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, মরিয়ম মান্নান নাটকবাজ। পুলিশ ও সাংবাদিকদের মিথ্যা কথা বলে প্রায় এক মাস বিভ্রান্ত করেছে। ময়মনসিংহে গিয়েও মরিয়ম নাটক সাজায়। তিনি আটককৃতদের মুক্তি এবং রহিমা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের শাস্তির দাবি করেন।
এ মামলায় আটক হেলাল শরীফের মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী আন্তারা ফাহমিদা বলেন, তার বাবা কোনো অপরাধ করেনি, অথচ তারপরও তাকে জেল খাটতে হচ্ছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা নানান কটূক্তির শিকার হয়েছে।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল ওয়াহাব জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) একটি দল বোয়ালমারী পৌরসভাধীন সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। পরে রাতেই খুলনার পুলিশ রহিমাকে নিয়ে খুলনা উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন। এর বেশি কিছু তাৎক্ষণিকভাবে জানানো সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো.মাসুদুর রহমান ভূঞা বলেন, শনিবার রাতে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন।
জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে নিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা। পরে আর ঘরে ফেরেননি তিনি। অন্যদিকে স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। এ সময় একই দিন রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।