মুন্সিগঞ্জ

বিপথগামী শিক্ষক-ছাত্ররা জড়িত, জেল থেকে বেরিয়ে হৃদয় মণ্ডল

জামিন পেয়েছেন কথিত ‘ধর্ম অবমাননা’র অভিযোগে গ্রেপ্তার মুন্সিগঞ্জের বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। দু’বার জামিন আবেদন নাকচ হবার পর রোববার (১০ এপ্রিল) শুনানি শেষে মুন্সিগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত দায়রা জজ মোতাহারাত আক্তার ভূঁইয়া তাকে জামিন দেন।

জেলে থেকে বের হয়ে হয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল বলেন, ঠিক মতো লেখাপড়া করে না এরকম বিপথগামী কিছু ছাত্ররা এই কাজ করেছে। ওই ছাত্রদের সঙ্গে বিপথগামী কিছু শিক্ষক জড়িত আছেন।

তিনি বলেন, আশেপাশে প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে কিছু শিক্ষকের যোগসাজস এখানে থাকতে পারে।

তবে প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে কোন শিক্ষকরা এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন তাদের নাম উল্লেখ করে বলেননি হৃদয় মণ্ডল।

কিছু শিক্ষক এর আগেও হৃদয় মণ্ডলকে ঢিল ছুঁড়েছে, দরজা ধাক্কা দিয়েছেন- এই শিক্ষকরা কারা; সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হৃদয় মণ্ডল বলেন, এর আগেও আক্রমণের শিকার হলেও আমি তাদের দেখতে পাইনি।

ঘটনা দিন ক্লাসে কী হয়েছিল জানতে চাইলে হৃদয় মণ্ডল উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওইদিন আমি বিজ্ঞান পড়াচ্ছিলাম। কিন্তু কিছু ছাত্র ধর্মীয় অনুভূতির বিষয় উল্লেখ করে আমাকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছিল।

হৃদয় মণ্ডল বলেন, ছাত্ররা যে মোবাইলে কথা রেকর্ড করছিল তা বুঝতে পারিনি।

শেষে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে এক স্কুল শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে আটক করেছে পুলিশ।

পরে এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী বাদি হয়ে ইসলাম ধর্মের ওপর আঘাত করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পরে মামলার বাদি মো. আসাদ মিয়া বলেছেন, না বুঝেই অন্যের ইচ্ছায় মামলায় কাগজে সই করেছেন তিনি। মামলার বাদি হতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলায় তিনি রাজি হয়ে যান।

আসাদ বলেন, গণিত শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল স্যারকে আমার চাকরি জীবনে ধর্ম নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে শুনিনি। তিনি একজন ভালো শিক্ষক। মামলার বাদি হতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাকে বলেছিলেন এবং আমি তাতে রাজি হই।

বাদির বক্তব্য, তবে আমার সঙ্গে ঘটনার ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কোনো আলোচনা করেনি। শুধু মামলার বাদি হতে সদর থানায় ডাকা হয়েছিল। আমারও প্রশ্ন আমিই কেন এই মামলার বাদি? স্কুলে তো আরও অনেক মানুষ ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker