কটিয়াদী

কটিয়াদীতে বিনোদন কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

এবার কোন সরকারী নিষেধাজ্ঞা নেই। করোনার মহামারির জন্য দুই বছর ধরে বন্ধ থাকার পর ঈদের ছুটিতে ঈদ উৎসবের ভিড় জমেছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। মঙ্গলবার ঈদের দিন থেকে এ ভিড় স্থানগুলোতে আরও উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। ঈদের দিন বৃষ্টির হানায় দর্শনার্থী ছিল কম। তবে সেই তুলনায় ঈদের পরদিন সকাল থেকেই মানুষের উপচেপড়া ভিড় পুরো এলাকাজুড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা সামনে ভিড় জমাচ্ছেন। বিশেষ করে কচিকাঁচার হৈ হুলোড়ে মুখর ছিল মরুদ্বীপ ৭১ স্বাধীনতা পার্ক, পাইকান ব্রীজসহ উপজেলার বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। এসবের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান নরসিংদী এলাকায় স্থাপিত ড্রিম হলিডে পার্কে ও কিশোরগঞ্জে আবস্থিত নেহাল পার্কে। এ ছাড়া আহসান মঞ্জিল,লালবাগ কেল্লাসহ ঐতিহাসিক স্থানসহ অন্যসব বিনোদন কেন্দ্রগুলো ছিল লোকে লোকারণ্য। ঈদের দিনও বিনোদনপ্রেমী মানুষের ব্যাপক সমাগম ছিল এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের দিন থেকেই ভিড় জমতে থাকে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে। সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই থাকেনি। সকাল থেকেই পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছুটে আসেন বিনোদনপ্রেমীরা। মেতে ওঠেন আনন্দ আড্ডা আর খুনসুটিতে। ঈদের তিন দিনে এসব স্থানে সাড়ে চার লাখ দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। অতিরিক্ত মানুষের প্রধান সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্চে। মানুষের ভিড়ে ফুটপাথ দিয়েও হাঁটাচলার সুযোগ ছিল না। ঈদের দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ। প্রতিদিন দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। উপজেলা শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের নামে লেখা ব্যানার সংবলিত গাড়িগুলোতে বিনোদনপ্রেমীদের মাইক ও সাউন বক্স বাজিয়ে নেচে গেয়ে হৈ হুল্লোড় ও আনন্দ করতে দেখা গেছে। পার্কজুড়ে বসেছে দোকানের হাট। নানা রকম পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো। বিভিন্ন খেলনা, বাঁশি, বেলুন, মাটির গাড়ি ও খাবারের দোকান। নদীর বুকে ভাসমান বিলুপ্ত আশির দশকের বেশ কিছু পাল তোলা নৌকা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। ঈদের দিন থেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌকা ভ্রমণে বের হন অনেকেই। কেউ নদীর তীরে বসে বন্ধুবান্ধব নিয়ে চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছেন। তবে বেলা যতই গড়িয়ে গেছে ততই বাড়তে দেখা গেছে মানুষের ঢল।

বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে সুত্রে জানাযায়,ঈদের দিন সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন। দুপুর নাগাদ এ সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। উপজেলার সাধারণ আর মধ্যবিত্তের জন্য বিনোদন কেন্দ্র বলতে এখন ব্রীজগুলো প্রধান হয়ে উঠেছে। ঈদের দিন সকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমান হাজারও মানুষ। বিনোদনপ্রেমীদের জন্য নতুন সাজে প্রস্তুত করা এবং ব্রীজের নীচে নামানো হয়েছে নতুন বোটও।

এবারও ঈদ উপলক্ষে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে চলছে ঈদ প্যাকেজ। ৬০ টাকাতেই ওয়াটার বাসে ঘোরা যাচ্ছে গোটা পার্ক। সন্ধ্যা হতে সাজে রঙিন রূপে। চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে পুরো পার্ক। রঙবেরংয়ের দৃষ্টিনন্দন বাতি পার্কগুলোকে এনে দেয় নজরকাড়া সৌন্দর্য। ঈদ আনন্দ যেন উপচে পড়েছে রাজধানীর পার্কে। বিনোদনপ্রেমী মানুষ গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বাড়তে থাকে মানুষের সংখ্যা।

মরুদ্বীপ ৭১ স্বাধীনতা পার্কের কর্মকর্তা জানান, ঈদুল ফিতরের দিন পার্কে প্রবেশের জন্য বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। তবে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারির কারণে পার্কে প্রবেশের ক্ষেত্রে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। পার্ক খুলে দেওয়ার আগে থেকেই সেখানে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। এর মধ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশু, প্রতিবন্ধী ও শিক্ষার্থীদের বিনা টিকিটে পরিদর্শন করার সুযোগ রেখেছে সরকার।

নেহাল পার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, মহামারি করোনা আর সময়ের অভাবে তেমন একটা ঘুরতে বের হওয়া সম্ভব হয় না। তাই ঈদ উপলক্ষে আজ পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি।

তরুন-তরুণীরা জানান,প্রতি বছর আমরা ঈদের দিনের অপেক্ষায় থাকি। এ দিন এমন একটি দিন যা সারা বছর পাওয়া যায়না। এমন দিন আসবে যে বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরতে পারব।

কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদাত বলেন,ঈদে বিনোদন স্পটগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা কেউ ঘটালে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker