পুনম শাহরিয়ার ঋতু, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পারিবারিক জমি সংক্রান্ত জেরে রেজা সাইদ আল মামুন (৫৫) নামের কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের ছোট ভাই মজিবর রহমান ও নিহতের দুই ভাতিজা সুমন ও সেজানসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
গতকাল রবিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের সাজনধারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কলেজ শিক্ষক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা ও পরবর্তীতে ওই বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে ওই এলাকার মৃত হাজী আফাজ উদ্দিনের ছেলে।
এ ঘটনায় গতকালকেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার সকালে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ হত্যাকন্ডের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মজিবর রহমানকে প্রধান আসামী করে চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম হাসি। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে প্রথম জানাজা বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজ মাঠে ও নিজ বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নিহত ওই কলেজ শিক্ষকের সঙ্গে তার ছোট ভাই মজিবুরর রহমানের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। গত রবিবার বিকেলে কলেজ শেষে রেজা সাইদ আল মামুন বাড়ীতে গিয়ে বিকেলে তার জমির আইল ঠিক করছিলেন। এসময় তার ছোট ভাই মজিবর এবং মজিবরের দুই ছেলে সুমন রহমান ও সেজাদ রহমানসহ আরও কয়েকজন মিলে ওই কলেজ শিক্ষকের উপর কোদাল, লাঠি দা নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে ওই শিক্ষক গুরুতর আহত হন।
পরে ওই কলেজ শিক্ষক নিজেকে বাঁচাতে দৌড়ে নিজ বাড়িতে আশ্রয় নিলে, সেখানেও মজিবুর সেজাদ ও সুমন গিয়ে তাকে ঘর হতে বের হয়ে আসতে বলে হুংকার করে। এসময় কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী হাসিনা বেগম আশেপাশের লোকজনদের কাছে সাহায্য চান ও ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করেন। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত মজিবুর রহমান ও তার ছেলেরা কৌশলে পালিয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয়রা কলেজ শিক্ষককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
নিহতের মেয়ে সুচী আক্তার (২৩)বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে আমার চাচা এবং চাচাতো ভাইয়েরা মিলে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি বাবা হত্যার বিচার চাই, আমি ওদের ফাঁসি চাই।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম নাসিম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কলেজ শিক্ষককে তার ভাই ও ভাতিজারা পিটিয়ে হত্যা করেছে মর্মে জানতে পেরেছি। নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম হাসি বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে ময়না তদন্তে শেষে বিকেলে সাঈদ রেজা আল মামুনের মৃতদেহ তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। প্রিয় শিক্ষকের এমন মৃত্যুতে গভীর শোকাহত হন তার সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। এদিকে গ্রামের বাড়িতে নিহতের মরদেহ পৌঁছালে এক নজর শেষ দেখা দেখতে আত্বীয় স্বজনের পাশাপাশি শত শত গ্রাম বাসীরা নিহতের বাড়ির আঙ্গিনায় ভীর জমান।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.