গাজীপুর

কাশিমপুরে কাউন্সিলর লিটনের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুর থানার মাদবপুর এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় একটি সড়ক সম্প্রসারণ কাজ করতে গিয়ে বাড়ী না ভাঙ্গার শর্তে এক বাড়ীওয়ালার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: ওসমান গণি লিটন দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে ৩ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।

এঘটনায় বাড়ীর মালিক শওকত হোসেন মন্ডল বাদী হয়ে সোমবার রাতেই কাশিমপুর থানায় ১নং ওর্যাড কাউন্সিলর মো: ওসমান গণি লিটনকে প্রধান আসামী করে ২৮ জনের নাম উল্লেখ্য করে একটি অভিযোগ দিয়েছে।

এলাকাবাসী, অভিযোগকারী ও কাউন্সিলরের কর্মীরা জানান, চলতি অর্থ বছরের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ড এলাকায় রাজস্ব খাত থেকে ১৩টি ইট সলিং সড়ক প্রকল্প টেন্ডার হয়। সেই সড়ক প্রকল্পের মধ্যে কাশিমপুর-জিরানি বাজার সড়কের মাধবপুর এলাকার একটি শাখা সড়কের ১৩ ফুট সড়ক সম্প্রসারণ কাজ পান একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম। প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষ হওয়ার তরিগড়ি করে সড়কটি প্ল্যান ছাড়াই সড়কের দুই পাশের বাড়ীর লোকজনের স্থাপনা ভেঙ্গে ১৩ ফুট বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেন।

আরো পড়ুন: পীরগঞ্জে ৪৫ বোতল বিদেশি মদসহ আটক-১

এই শাখা সড়কের পাশে মাদবপুর এলাকার শওকত হোসেন মন্ডলের বহুতল ভবনের কিছু অংশ ভেঙ্গে সড়ক দেওয়ার জন্য কাউন্সিলর মো: ওসমান গণি লিটন নির্দেশ দেন।

এসময় বাড়ীর মালিক শওকত হোসেন মন্ডল বাড়ী ও সামনের শৌচাগার ভেঙ্গে সড়ক দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন কাউন্সিলরকে। এ সময় কাউন্সিলর দাবী করেন, তার বাড়ী ভেঙ্গে সড়ক না দিলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এর ঘটনার জের ধরে গত সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে কাউন্সিলর অর্ধশতাধিক লোকজন ও একটি ভেকু নিয়ে শওকত আলীর বাড়ীর সামনের দেওয়াল ও শৌচাগার ভাঙতে শুরু করেন। খবর পেয়ে শওকত হোসেন মন্ডলসহ ১০-১২ জন আত্বীয় স্বজন সেখানে গিয়ে কাজে বাঁধা দেন। এসময় কাউন্সিলর মো: ওসমান গণি ক্ষিপ্ত হয়ে দারালো দা দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তখন কাউন্সিলরের সহযোগিরা লাঠিশোঠা দিয়ে শওকত হোসেন মন্ডলের সাথে আসা যুবকদের মারধর করতে থাকেন।

আরো পড়ুন: আরাভ খান গ্রেপ্তার হননি

গ্রামবাসী খবর পেয়ে ঘটনা ছুটে এসে আহত শওকত হোসেন মন্ডল, তার ছেলে মেহেদী হাসান শিশির, ভাতিজা শাকিল মন্ডলকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে আহত অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।

অভিযোগকারী শওকত হোসেন মন্ডল জানান, আমার বহুতল ভবন ও শৌচাগার ভেঙ্গে সড়ক দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এসময় বহুতল ভবন ভাঙ্গা সম্ভব না বলে জানালে তখন কাউন্সিলর লিটন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। কাউন্সিলর মো: ওসমান গণি লিটনের দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ার সন্ধ্যার দিকে ভেকু দিয়ে আমার বাড়ী দেওয়াল খোটা ও শৌচাগার ভাঙ্গা শুরু করে। এ সময় বাঁধা দিলে আমার উপর হামলা চালায়।

আরো পড়ুন: আমাকে আর সাকিবকে মেডেল দেওয়া উচিত: হিরো আলম

অভিযুক্ত ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: ওসমান গণি লিটন জানান, নতুন সড়কটি নির্মাণ করতে গেলে জনগণের কারোর ১-২ ফুট করে স্থাপনা ভাঙতে বলা হয়েছিল।

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার স্থাপনা না ভেঙ্গে অন্যদের ভাঙ্গতে নিরোৎসাহিত করছিল। সন্ধ্যার পর ভেকু নিয়ে ভেঙ্গে সড়ক সম্প্রসারণ করার চেস্টা করা হলে তারাই পুলিশ নিয়ে এসে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমি কিংবা আমার লোক কেউ তাদের গায়ে হাত দেয়নি।

কাশিমপুর থানার ওসি রাফিউল করিম রাফি জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker