নারীর নিরাপত্তা ও জীবনমানের স্থায়ী উন্নয়ন ব্যতিরেকে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় ও আইএলও কনভেনশন-১৯০ ও ১৮৯ অনুসমর্থন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী ২২০০০ টাকা ঘোষণার দাবি নিয়ে ০৮ মার্চ’২০২৩ইং আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করেছে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি। এবারের প্রতিপাদ্য “ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন: জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন”।
আমরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। বুধবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ন্যাশনাল ওয়ারকার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ারকার্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে আন্তজার্তিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে নারী শ্রমিক সমাবেশ ও র্যালী অনুষ্ঠিত।
সমাবেশে ন্যাশনাল ওয়ারকার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ারকার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগম এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো: ইলিয়াস, যুগ্ম সম্পাদক খাদিজা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা মিসেস সুইটি, মো: ফরিদ উদ্দীন, রোজিনা আক্তার সুমি, মো: তাহেরুল ইসলাম, সেলিনা হোসাইন, সালমা বেগম, জোসনা বেগম, খাদিজা আক্তার, ফাতেমা বেগম ও মো: আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা বেগম বলেন আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মধ্যে এগিয়ে চলেছি- সেখানে আবিষ্কার ও প্রযুক্তির বিশ্বে সমতা ভিত্তিক সমাজ গড়ার প্রত্যয়ই এবারের অঙ্গীকার। প্রযুক্তির বলয়ে হরেক অপরাধ প্রবণতা এবং নারীদের বিভিন্নভাবে বিপদে, ফাঁদে ফেলার অপতৎপরতা সেসব বিষয়ে অপরাধ চক্রকে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে নারী সমাজকে নিশ্চিত ও স্বস্তিকর জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ করতে আইনি কার্যক্রমও অত্যন্ত জরুরি। তাছাড়া নারীদের সম্পত্তিতে সমঅধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বক্তাগণ বলেন নারীর উন্নয়ন ঘটেছে, কিন্তু ক্ষমতায়নের জায়গাটি এখনো অনেকখানি দুর্বল। বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় নারীরা কারো স্ত্রী, কন্যা, মা হিসেবে পরিচিত হন। অর্থাৎ নারীরা পরিচয়ের দিক থেকে সংকটের মুখে। আমরা একটা পিতৃতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করছি। পুরুষতন্ত্র কেবল পুরুষের মধ্যেই নয়, নারীর মধ্যেও রয়েছে। আমরা বিভিন্ন গবেষণায় দেখতে পাই, চাকরি হচ্ছে নারীর জন্য, কিন্তু ক্যারিয়ার হচ্ছে পুরুষের জন্য। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন জাগে, অস্তিত্বের সংকট রেখে নারীদের কি ক্ষমতায় আনা সম্ভব? প্রথাগত মানসিকতা পরিবর্তন করতে সামাজিক আলোচনার কোনো বিকল্প নেই।
নারীর নিরাপত্তা ও জীবন মানের স্থায়ী উন্নয়ন ব্যতিরেকে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে গেলে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। নারীর জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা না গেলে নারীর সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশ ঘটবে না। ফলে বিঘ্নিত হবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী জাতীয় প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়, তোপখানা রোড এবং পল্টন মোড় প্রদক্ষিণ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাপ্ত হয়। আন্তজার্তিক নারী দিবসে
গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী ২২,০০০ টাকা ঘোষণা, নারীর উপর সকল প্রকার সহিংসতা-নির্যাতন বন্ধ করুন, আইএলও কনভেনশন ১৯০ ও ১৮৯ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন, মাতৃকালীন ছুটি ৬ মাসের আইন করণ, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতসহ কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ সংবেদনশীল পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে ও নারীবান্ধব আইনগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নের দাবী তুলা হয়।