নোয়াখালী

উল্টে যায় ‘গন্ধরাজ’, ফিটনেসবিহীন বাস নিয়ে ক্ষোভ নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিআরটিসির ফিটনেসবিহীন দ্বিতল বাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আর শঙ্কা বেড়েই চলছে। সড়কের বেহাল দশার মতোই বিআরটিসির ফিটনেসবিহীন বাস এখন শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের অন্যতম কারণ।

এদিকে, গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআরটিসির ফিটনেসবিহীন লাল বাস ‘গন্ধরাজ’ শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে রাস্তার পাশে খাদে উল্টে পড়ে যায়। বাসে শিক্ষার্থী না থাকায় এতে কোনো শিক্ষার্থী হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আহত হন চালক।

বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার খবরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিআরটিসির বাসগুলোর একটিরও ফিটনেস নেই। কোনটির বিভিন্ন অংশ খুলে পড়ছে আবার কোনটির জায়গায় জায়গায় ভাঙা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, একদিকে রাস্তা খারাপ অবস্থা। তারওপর বিআরটিসির ফিটনেসবিহীন দ্বিতল বাস ক্যাম্পাস থেকে শহরে ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু এমন ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে একবার গেলে দ্বিতীয়বার যেতে ইচ্ছে হয় না। বিআরটিসির ফিটনেসবিহীন বাসগুলো পরিবর্তন করে নতুন বাস যুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। সড়কগুলোর দ্রুত সংস্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। যাতে করে আমরা নিরাপদে বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া-আসা করতে পারি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত। ওইদিন বাসে শিক্ষার্থী থাকলে মারা যেতো অনেকে। ভাগ্য ভালো যে শিক্ষার্থীরা ছিলো না। কর্তৃপক্ষের উচিত ফিটনেস আছে এমন বাস ভাড়া করা। ফিটনেসবিহীন এসব বাসের চেয়ার ভাঙা, লাইট ঠিকমতো জ্বলে না, ফ্যান নেই। ড্রাইভাররা বেপরোয়া গতিতে বাস চালান। সবমিলিয়ে খুব বাজে অবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কোনো শিক্ষার্থী মারা গেলে তার দায়ভার কী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবে?

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন উপদেষ্টা ড. এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ফিটনেসবিহীন বাসের বিষয়ে আমরা বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে এই মুহূর্তে নতুন বাস দেওয়া সম্ভব নয়। সরকারি ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নতুন করে বাস কেনার কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন একটি বাস কিনতে টাকা জমা দিয়েছে। কিন্তু অনুমতি না পাওয়ার কারণে গাড়ি হস্তান্তর করা সম্ভব হচ্ছে না। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষও আমাদের একই ধরণের সমস্যার কথা জানিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ামাত্রই আমরা বিআরটিএ থেকে নতুন বাস নেবো। ততোদিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের একটু কষ্ট করে চলাচল করতে হবে।

চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমরা বার বার কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। আমাদের ভাড়া করা বাসগুলেতে যাতে বয়স্ক ও অভিজ্ঞ চালক দেওয়া হয়, এমন প্রস্তাবে তারা রাজি হয়েছেন। এছাড়া ভোগান্তি কমাতে দ্রুতই শিক্ষার্থীদের জন্য বাস স্টপেজ ঠিক করে দেওয়া হবে। এছাড়া তিনি বেহাল সড়কে ঝুঁকি এড়াতে বাসে জায়গা থাকা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দরজায় দাঁড়িয়ে যাতায়াত না করার পরামর্শ দেন এবং দ্রুত পরিবহন সমস্যার সমাধান হবে বলে আশ্বাস দেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button