চট্টগ্রামে চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২১ আগস্ট) তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে নগরের খুলশী থানার লালখান বাজার এলাকায় দুই শিশুকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর ও চুল কেটে দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
তিন পুলিশ কনস্টেবল হলেন- মো: মেহেদী, মো: মাজহার ও মো: এহসান। তারা নগর পুলিশের মনসুরাবাদ লাইনে থাকেন। সেখানে থেকে নগরের বাটালি হিল, লালখান ম্যাজিস্ট্রেট কলোনিসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য টহল পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন তারা।
ঘটনার শিকার দুই শিশু লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকে। তাদের একজন স্থানীয় একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা একটি কারখানায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। আরেক শিশু কিছু করে না।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিশুদুটি লালখান বাজার এলাকার মতিঝর্ণা এলাকায় থাকে। গত শুক্রবার দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির নিরাপত্তা প্রহরী মো: তাজুলকে পাথর ছুড়ে মারে কেউ একজন। এ সময় কনস্টেবল মেহেদী, মাজহার ও এহসান তখন সেখানে টহল দিচ্ছিলেন। পরে তারা তাজুলের বিষয়টি শুনে আড্ডায় থাকা কয়েক শিশু-কিশোরকে ধাওয়া করে। এর মধ্যে ভুক্তভোগী দুই শিশুকে ধরে পাশের জিলাপি পাহাড়ে নিয়ে খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে। পরে দুজনকেই আবার বাড়িতে দিয়ে আসেন।
ঘটনার শিকার এক শিশুর মা বলেন, আমার ছেলে কোনো দিন চুরি করেনি। চুরি করেছে বলে পুলিশ আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছে। মাথার চুলও কেটে দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে ছেলে ভয়ে বাসায় থাকছে না।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ঘটনার দিন আমি ছুটিতে ছিলাম। পরে এসে জানতে পারি। দুই কিশোরকে টহল পুলিশের সদস্যরা ধরলেও স্থানীয় থানা পুলিশকে কিছুই জানাননি। তাদের উচিত ছিল থানা পুলিশকে জানানো।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে তিন পুলিশ কনস্টেবলকে পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।