মৌলভীবাজার

রেললাইন থেকে হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন

রেললাইনে চলবে ট্রেন। পথে বসানো হবে পিজো ইলেকট্রিক ক্রিস্টাল ডিভাইস। এতে ট্রেনের চাকার চাপে উৎপাদন হবে এসি ভোল্টেজ। একই ডিভাইস থাকবে চাকার সাথের স্প্রিংয়ে। সেখান থেকেও ভোল্টেজ উৎপাদন হবে।

সেই বিদ্যুৎ জমা হবে স্টোরেজ স্টেশনে। ট্রেনের ছাদ আর লাইনের মাঝে থাকবে সোলার প্যানেল। সূর্য্যের তাপ থেকে সেখানে উৎপাদিত হবে ডিসি ভোল্টেজ। সেগুলো আবার ইনভার্টারের সাহায্যে রূপান্তর হবে এসি ভোল্টেজে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের অভিনব এই কৌশল উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শিল্ট দাস। তিনি এই প্রযুক্তির নাম দিয়েছেন রেললাইন থেকে ফ্রি এনার্জি উৎপাদন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধুমাত্র বল প্রয়োগ থেকে ঘণ্টায় এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। আর সোলার প্যানেল যুক্ত হলে সেখান থেকেও প্রতি কিলোমিটার এলাকা থেকে ০.০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

শিল্ট দাস মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

শিল্ট দাসের দাবি- মেট্রোরেল প্রকল্পে এই প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পারলে বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, রেললাইন থেকে মূলত দুটি পদ্ধতিতে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। রেলের চাকার বল প্রয়োগের মাধ্যমে ও সোলার প্যানেলের সাহায্যে।

শিল্ট দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে লোডশেডিংয়ের অবস্থা দেখে আমি চিন্তা করলাম কীভাবে ফ্রি এনার্জি উৎপাদন করা যায়। মেট্রোরেলের যে প্রকল্প চলছে, সেখানে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। সেখানে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বৃহৎ একটি অংশের বিদ্যুৎ ফ্রিতে পেতে পারি। সোলার প্যানেল যদি আমরা এক কিলোমিটার এলাকায় ব্যবহার করি, তাহলে সেখান থেকে ০.০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এটা জার্মান ও ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো পরীক্ষামূলক চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, মেট্রোরেল কিংবা সাধারণ যে ট্রেন, সেখানে রাস্তায় অনেক চাপ পড়ে। রেলের রাস্তায় যে চাপ পড়বে সেখান থেকে প্রতি ১৯ নিউটন বল প্রয়োগ করার মাধ্যমে ৫-৬ এসি ভোল্ট উৎপন্ন হয়। এই পদ্ধতি যদি এক কিলোমিটার জায়গায় ব্যবহার করি, তাহলে সেখান থেকে আমরা এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব।

মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান (ইন্সট্রাক্টর) প্রকৌশলী খালেদ হোসাইন অনিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, অবকাঠামোগত দিকগুলো বিবেচনা করে যদি সরকার এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করে, তাহলে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

নতুন নতুন যে রেললাইন তৈরি হবে সেখানে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। হয়তো আমাদের দেশে এই প্রজেক্টটা বাস্তবায়ন করা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হবে। তবে চেষ্টা করলে পারা যাবে। মেট্রোরেলেও এটি ব্যবহার করা যাবে। তাহলে বৃহৎ একটি বিদ্যুতের ঘাটতি আমরা এখান থেকে পূরণ করতে পারব। উন্নত দেশগুলো এটি নিয়ে কাজ করছে।

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker